| অজানা বিবেকানন্দ - ঐশ্বর্য্য কর্মকার || আত্মজ - July |

 শরীর স্বাস্থ্য যখন ভালো ছিল স্বামী বিবেকানন্দের একটা মহৎ গুন্ ছিল , তাঁকে কেউ সহজে আগলে রাখতে পারতো না। হয়তো একটা লোক তাঁর সামনে তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলছে - স্বামীজী কিন্তু রাগ দূরের কথা , মুচকি হেসে তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিতেন। 



https://aishwaryakarmakar19.blogspot.com/2021/05/revisited-rays-nayak.html



এই স্বামীজী কিন্তু অসুস্থ হলে শিশুর মতন হয়ে যেতেন। পরিব্রাজক জীবনে হৃষিকেশে তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। একটু সুস্থ হয়ে তিনি খিচুড়ি খেতে চাইলেন। প্রিয় গুরুভাই রাখাল খিচুড়ি রাঁধলেন , তিনি জানতেন প্রচন্ড ঝাল না হলে স্বামীজীর পছন্দ হবে না , কিন্তু রোগের কথা ভেবে শেষ মুহূর্তে খিক্গুড়িতে একটু মিছরি দিয়ে দিলেন। স্বামীজী খেতে গিয়ে খিচুড়ির মধ্যে একটা সুতো দেখতে পেলেন। ওখানকার দিনে খিচুড়িতে দু - একটা সুতো পাওয়া যেত।  খিচুড়িতে সুতো কেন ? - জানতে চাইলেন। সকলে বললো , এক ডেলা মিছরি ফেলেছে রাখাল।  মহাবিরক্ত হয়ে আক্রমণ করলেন এবার গুরু ভাইকে " শালা , রাখাল , এ তোর কাজ , তুই খিচুড়িতে মিষ্টি দিয়েছিস।  দু শালা।  তোর একটা আক্কেল নেই "। 


https://aishwaryakarmakar19.blogspot.com/2021/05/ray-and-his-music.html




বিশ্ব বিজয়ের পর ফিরে এসে বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠার পর সদাপ্রসন্ন ও প্রাণবন্ত স্বামীজীর একটি ছবি এঁকে দিয়েছেন স্বামী তুরিয়ানন্দ , " নরেনের  সব কাজ কি চটপট , পাগড়ি বাঁধবে তাও চটপট ....... অন্য লোকে একঘন্টায় যে কাজ করছে , নরেন দু মিনিটে সে কাজ করে ফেলে এবং এক সাথে পাঁচ ছয়টা কাজ করে। " 


Digital art



" একদিন মঠ থেকে রেগে বেরিয়ে গেলেন। বললেন , তোরা সব ছোট লোক , তোদের সঙ্গে থাকা অসহ্য। তোরা সব অনুষ্ঠান স্বাস্থমত নিয়ে ঝগড়া করবি। " কিন্তু শেষটা করলেন কি ? সেই ছোটোলোকদেরই সব দিয়ে গেলেন। 

স্বামী অখণ্ডানন্দ লিখছেন " স্বামীজী শেষটায় মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে হতাশ হয়ে জীবজন্তু নিয়ে থাকতেন। তাঁর অনেক হাঁস , পায়রা , কুকুর , বেড়াল ভেড়া ইত্যাদি ছিল।  দস্তুরমতো একটা চিড়িয়াখানা তৈরী করেছিলেন।  নিজের সেবার টাকা থেকে তাদের জন্য দেড়শো টাকা খরচ করতেন।  কুকুরের নাম মেরি , টাইগার।  ভেড়ার নাম মতরু। চিনে হাঁসের নাম যশোবতী রেখেছিলেন।  কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় স্বামীজীর দেহরক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পশুপাখি সব মরে যায়।  তিনি জেক যা দিয়ে গিয়েছিলেন , তাঁর একটি ও বেশিদিন বাঁচেনি। " 

Atmoj - june



স্বামীজীর দেহরক্ষার পরে খোকা মহারাজ কয়েকটি পশুপাখি অখণ্ডানন্দ কে দিয়েছিলেন।  একটি বেড়াল স্বামীজীর পায়রাটাকে লুকিয়ে খায়। স্বামী শঙ্করানন্দ সেই আশ্রমে ছিলেন।  তিনি বেড়ালটাকে এমন ঘুষি মেরেছিলেন যে , তাঁর হাত থেতলে গিয়েছিলো। 

 চুপি চুপি এলো ৪ ঠা জুলাই ১৯০২। স্বামীজীর অসুস্থতা ছিল , কিন্তু কেউ বোঝেনি যে সময় সমাগত।  প্রায় বিনা নোটিশ এ চলে গেলেন। যাবার তিনদিন আগে আকারে প্রকারে জানিয়ে গেলেন কোথায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে  হবে। 

দু বছর ধরে মৃত্যু উপত্যকার উপর দিয়ে শারীরিক ও মানসিক যাত্রা করে স্বামীজী যেন শেষ পর্যতো উত্তীর্ণ হলেন।  একমাত্র তিনিই লিখতে পারেন " অসীম একাকী আমি , কারণ মুক্ত আমি - ছিলাম মুক্ত , চিরদিন থাকবো মুক্ত। ......... আঃ কি আনন্দ প্রতিদিন তাঁকে উপলব্ধি করছি।  হাঁ  , হাঁ আমি মুক্ত , মুক্ত। আমি এক - এক অদ্বিতীয় .......... হাঁ এখন আমি খাঁটি বিবেকানন্দ হতে চলেছি। 


তথ্য : অবিশ্বাস্য বিবেকানন্দ 




Comments

Post a Comment

Popular Posts