। সারারাত কেটে যায় এইসব ভেবে।। পর্ব - ১।
ভাগ্যিস বঙ্কিমচন্দ্র , শরৎচন্দ্র এরা এখন আর নেই থাকলে হয়ত তাদের শুলে চড়াতে হতো ।যতই তাঁদের লিখিত উপন্যাস গুলি জীবনবোধপ্রসারী , আত্ম ও সমাজের নিহিত সংকট সন্ধানী হোক। বিবাহই যে শেষ কথা এবং চূড়ান্ত নির্ধারক শর্ত , এই নীতিপথে চললে কেবল বাংলা সাহিত্য কেন , বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা শিল্প - সাহিত্য এসবেরই রং হতো নিতান্ত ফ্যাকাশে । সবারই পরিসর হতো অতীব সংকীর্ণ।
বিবাহিত নগেন্দ্র ও বালবিধবা কুন্দের প্রেম সম্পর্ক ও আর হতো না আবার সন্দীপের তেজিয়ান দেশ প্রেমে , পৌরুষদীপ্ত ব্যাক্তিক্তে আকৃষ্ট হতো না বিমলা। মহেন্দ্র - আশালতার সংসারে বিনোদিনী এসে সম্পর্কের সমীকরণ গুলি পাল্টে দিতে পারতেন না।
বিবাহ - এই সামাজিক ও রাষ্ট্রিক প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে ঘুরতে থাকে মানব - সম্পর্কের বিচিত্র পরিণতি ও বিবিধ পরিস্থিতি। এতদিনে মোটামুটি আমরা সবাই বুঝেছি - বিবাহ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে বাইরের অর্থাৎ সমাজের প্রয়োজনেই। অন্দরের কথা শোনার দায় কারোর নেই আবার সেই বিষয়ে পরোয়াও কেউ বিশেষ করে না।
সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্ট ও রাজস্থান হাইকোর্ট জানিয়েছে লিভ ইন সম্পর্ক বৈধ। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন ও যদি বিবাহিত হন তাহলে সেটা অবৈধ বলে গণ্য করা হবে। এক বিবাহিত মহিলা যদি শশুড় বাড়ির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাড়ি ছেড়ে যদি ওপর কোনো পুরুষসঙ্গীর সাথে সহবাস বা লিভ ইন করেন তাহলে সেটা অবৈধ। বৈধ কেবল - চরম নির্যাতন সহ্য করে ওই মেয়েটির শশুরবাড়িতে বাস।
অথাৎ বিবাহে মন যদি না ও টেকে তাহলে আইনের চাপে পড়ে জোর করে সেখানে মন টিকিয়ে রাখতে হবে। সমাজের রীতি যা , নীতিও কি তাই ? আবার যা নীতি , তাই কি আইন ? প্রতিটি বিবাহিত সম্পর্কের অন্দরমহলের রোজনামচা বিচার করা অসম্ভব। কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে কি এখন ও আমরা বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানের উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করবো ?
সমাজে আজ বিবাহ বিচ্ছেদ স্বীকৃত। কিন্তু আজ ও সমাজে প্রচুর মানুষ আছেন যারা বিচ্ছেদের অধিকার অবধি পৌঁছনোর উপযুক্ত কোনো পরিকাঠামো নেই। তাদের কি হবে ? ভাবনার বিষয়।
Comments
Post a Comment