সারারাত কেটে যায় এইসব ভেবে।। পর্ব ১০।

 

এটা-সেটা -ওটা  লেখা 








মাদের বাড়িটা পুরোনো। সিঁড়িগুলো খাড়া।  অনেকটা খোলামেলা। প্রায় প্রতিটা ঘরেই দুটো করে বড়ো বড়ো জানালা। কোনো দুপুরবেলা যখন বৃষ্টি আসে , জানালাতে বসে বসে দিব্বি বৃষ্টির জলের ছাট গায়ে আসে। জানালার শিক  আর জলের গন্ধ মিশে একটা মিশ্র ধাতব গন্ধের সৃষ্টি হয় । 


স্লেট-রঙা আকাশটা নিচে ঝুঁকে পড়ে একসময়।  সামনেটা ধোঁয়াটে, আবছা। নিমের ছোট ছোট সাদা ফুল বনজ সুঘ্রাণ ছড়িয়ে শরীর বিছিয়ে মাটিতে। বন-তুলসীর ঘন ঝোপের মধ্যে ডানা গুটিয়েছে একটা শালিক, হলদেটে একটা ফড়িং সেদিকে যেতে গিয়েও থমকে যায়। স্বচ্ছ পাখায় কয়েক বিন্দু জল। 


আমার মামাবাড়িতে এই বৃষ্টির স্বাদটা একটু আলাদা।  হয়তো সেখানে পুকুর আছে বলেই স্বাদ তা পাল্টে যায়। পুকুরপাড়ে নিস্তব্ধতা, অন্ধকার ঘরে খোলা জানালা– সেইসব ঘুমহীন কল্পজাল বোনার রাতে, চুপি চুপি কথা হতো নিজের সঙ্গে।পুকুর পাড়ে ছোট্ট দু’টো ফ্যাকাশে গোলাপি বনফুল ফুটেছে ভয়ে ভয়ে টবের কোণায়, আঁজলা করে জল দিই ওদের।মাঝে - মাঝে সবুজ গঙ্গাফড়িং আসতো একটা সকালে। বৃষ্টির পরের দিন সকাল বেলা শুকনো ফুলগুলো  কুড়িয়ে নিয়ে মাটির ভাঁড়ে রাখতাম । 

 এখন আর কাজের চাপে মামাবাড়ি খুব একটা যাওয়া হয় না। কিন্তু তাতে কি যায় আসে , আমি যাই বা না যাই , থাকি বা না থাকি, আমি যে ছিলাম, সেই রেশটুকু যেন থাকে।


Comments

Popular Posts