| ফেলনা নয় -- ক্ষুদিরাম নস্কর | | ।জানার কোনো শেষ নেই।। আত্মজ - july ।
আমরা নীল বিদ্রোহের কথা সবাই জানি। ভারতের ইতিহাসে, সে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
চাষীদের উপর কি নির্মম অত্যাচার করেছিল নীলকর সাহেবরা।
ইংল্যান্ডে তখন শিল্প বিপ্লব শুরু হয়ে গেছে। হাতে বোনা কাপড় উঠে গিয়ে, মেশিনে বোনা কম সময়ে বেশি কাপড় উৎপাদন করছে। আর সেই কাপড় রঙিন করতে চাই নীল ।
সেই নীলের চাষ ভালো হতো এই ভারতের মাটিতে। যিনি এই অত্যাচারিত ,নিপীড়িত, নীল চাষীদের মুক্তি দিয়েছিলেন ,তিনি 1905 সালে রসায়ন শাস্ত্রের জন্য পেলেন নোবেল পুরস্কার।
তাঁর জন্ম 1835 সালে ।ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানের প্রতি তার অনুরাগ ,অধ্যবসায়ও একাগ্রতা তাকে সাফল্যে পৌঁছে দিয়েছিল।
তাঁর এই নীল চাষ সম্পর্কে এক মজার গল্প শোনা যায়।
এটা হয়তো অনেকেই জানেন ।আবার অনেকেই জানেন না, তাদের জন্য বলছি।
একদিন গবেষণাগারে সবাই ব্যস্ত।
নাওয়া- খাওয়ার ফুরসত নেই। চিন্তা ভাবনায় সবাই ব্যস্ত তার সহকর্মীরা। কতকগুলি মিশ্রণ এদিক-ওদিক বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছড়ানো। কতকগুলো বুনসেন বার্নারে বসিয়েও দেওয়া হয়েছে। কিছু মিশ্রন আগে থেকেই ফুটছে।
একটু সময় পেতেই ,অধ্যাপক অন্যান্য সহকর্মীদের নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে বেরিয়ে গেলেন।
গ্যাস নেভানোর কথা ছিল অন্য এক সহ কর্মীর। ক্ষুধা ক্লান্তিতে সে বেচারা গেলেন ঘুমিয়ে। অধ্যাপক ফিরে এসে তো মাথায় হাত ।দেখলেন ,টেবিলের উপর কাঁচের সব পাত্র ফেটে চৌচির।
বকযন্ত্রে থাকা দ্রবণের মিশ্রন গুলি, শক্ত হয়ে টেবিলের উপর ছড়িয়ে-ছটিয়ে নানা রঙে ঝিকমিক করছে।
যে সহকর্মীর উপর দায়িত্ব ছিল , তার মুখ গেল শুকিয়ে । অন্য সহকর্মীরা স্ফটিক টুকরো গুলো ঝেড়ে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে উঠলো।
হঠাৎ এই মহাবিজ্ঞানী বললেন দাড়াও !পৃথিবীতে কোন কিছুই ফেলনা নয়। টেবিলে যা পড়ে আছে, আগে সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা দরকার।
একটা লজ্জাকর ঘটনার অদ্ভুত ফল। এক মূল্যবান নীল রঙে রাসায়নিক সংশ্লেষ । যে রং নীল গাছ থেকে উৎপাদন হতো বহু ব্যেয়ে, জটিল পদ্ধতিতে, আজ তার সমাধান।
তারপর 1897 সালে বিশুদ্ধ কৃত্রিম নীল বাজারে এলো। শেষ হয়ে গেল নীল চাষের প্রয়োজনীয়তা ।স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল হাজার হাজার নীল চাষী।
প্রতিভাবান এই রসায়ন বিজ্ঞানী হলেন আদলফ্ ফন বাইয়ার। 1917 তে তিনি পরিজনদের কাঁদিয়ে , পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে, চলে গেলেন পরপারে।
Comments
Post a Comment